ছবি : জাবেদ রহমান জয় (১৯)।
পঞ্চগড়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের এক পর্যায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জাবেদ রহমান জয় (১৯) নামে এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি শহরের পুরাতন ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা জহিরুল হকের ছেলে।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পঞ্চগড় জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদলের দুই গ্রুপ তথা নিহত জয়ের গ্রুপ এবং নতুনবস্তি এলাকার আল-আমিনের নেতৃত্বাধীন আরেক গ্রুপ বুধবার দুপুর থেকেই কয়েক দফা সংঘর্ষে জড়ায়। রাতে জয় একাই সিনেমা হল মার্কেটের সামনে গেলে প্রতিপক্ষের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য তাকে ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে আল-আমিন নামে একজন ধারালো ছুরি দিয়ে জয়ের পেটে আঘাত করে। এতে তার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় জয়কে স্থানীয়রা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। তবে পথেই তার মৃত্যু হয়।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রেজওয়ানুল্লাহ জানান, “নিহতের পেটের বাম পাশে ধারালো অস্ত্রের গভীর আঘাত ছিল এবং ভুড়ি বের হয়ে এসেছিল। আমরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তা ভেতরে ঢুকিয়ে সেলাই করি এবং তাকে রেফার করি। এছাড়াও তার এক হাতের তালুতেও আঘাতের চিহ্ন ছিল।”
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শইমী ইমতিয়াজ জানান, “প্রাথমিকভাবে দুইজনের নাম পাওয়া গেছে—আল-আমিন ও পারভেজ। নিহত ও অভিযুক্ত দুজনই ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে পূর্ব শত্রুতার তথ্য পাওয়া গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।”
নিহতের বড় ভাই আশরাফ আলী বলেন, “রাতে কয়েকজন মোটরসাইকেল নিয়ে জয়কে খুঁজছিল। আমিও তাকে না পেয়ে দোকানে যাই। পরে ফোনে জানতে পারি জয়কে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার পেট কেটে নাড়িভুঁড়ি বের করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখি, অবস্থা গুরুতর। পরে রংপুর নেওয়ার পথে জয় মারা যায়। আমরা এই নির্মম হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালেই বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে স্থানীয় ছাত্রদল ও এলাকাবাসী। দাবি উঠেছে, হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার।
মতামত