ছবি : বীরগঞ্জের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ
সহকারী শিক্ষককে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ঘুস জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ এবং অপর একজন সহকারী শিক্ষকের সাথে অসৎ আচরন ও নানাভাবে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াবান্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবর রহমানের বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াবান্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এলাকার শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে আমরা ঘোড়াবান্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি এবং মাহাবুবর রহমানকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করি। আমি ওই বিদ্যালয়ে একাই দুইটি পৃথক দলিলে ৪৫ শতক জমি দান করি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রী মোছা: কোহিনুর রেবা স্কুলে শিক্ষকতা করবে মর্মে বিভিন্ন আসবাবপত্র কেনার জন্য প্রধান শিক্ষকের হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা প্রদান করে এবং স্কুল ঘর নির্মাণ করে সুন্দরভাবে কার্যক্রম চলতে থাকে। আমরা স্বামী ও স্ত্রী দুজনই সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করে আসছি এবং ২০১১ সালে শিক্ষকের পেশাগত মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছি।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হইলে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ হলে সেই তালিকায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে আমিনুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে পূর্ববর্তী তারিখে ভূয়া নিয়োগ দেখিয়ে বিশাল অংকের ঘুস নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে রেজোয়ান রহমান, মিজানুর রহমান ও কাঞ্চন রানী রায়সহ একটি তালিকা প্রস্তুত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর প্রেরন করে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষককে জানানো হলেও কোন সদুত্তর দিতে না পারায় ন্যায় বিচারের আশায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কোন ফল না পাওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং-২২৮/২৩)।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তির পর ৪জনকে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। আমার স্ত্রী মোছা: কোহিনুর রেবা ১৯৯৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে ০৩ অক্টোবর বিদ্যালয়ে যোগদান করে পরবর্তীতে আবারও ২০০৪ সালের ২১ জানুয়ারী পুন:নিয়োগ পেয়ে ০৯ ফেব্রুয়ারী তারিখে সামাজিক বিজ্ঞান পদে যোগদান করেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হওয়ার আগে ২০২১ সালের প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা জরিপে আমার স্ত্রীকে সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক পদবী রয়েছে। কিন্তু আমি মামলা দায়ের করার পর থেকে প্রধান শিক্ষক আমার স্ত্রী কোহিনুর রেবার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দিচ্ছেন না এবং বিভিন্ন সময়ে অসৎ আচরন করছেন। আগের হাজিরা খাতাগুলো সরাইয়া নতুন হাজিরা খাতা তৈরী করেন এবং প্রকাশ্যে বলেন যে একজনের চাকুরী খেয়েছি আরেক জনেরটা খাবো। প্রধান শিক্ষক ইচ্ছা করলে যা খুশি করতে পারেন। এই বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং বীরগঞ্জ উপজেলা নি র্বাহী কর্মকর্তাকে সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য আবেদন করি। কিন্তু কোন ফল না পাওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।
তার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরকম অনিয়মধারী, কুচক্রকারী, দূর্ণীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সকলের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তার বড় ভাই আব্দুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন।
কথা হলে প্রধান শিক্ষক মাহবুবর রহমান (০১৭১৮৬৭৮০৫২) বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। আমিনুল ইসলাম একটি এনজিওতে চাকুরী নিয়েছিলেন। তিনি বিদ্যালয়ে আসতেন না। এজন্য তার নাম এমপিওভুক্তির পর যুক্ত হয়নি। আর তিনি মামলা দায়ের করেছেন, আদালত যেভাবে নির্দেশ দিবেন সেভাবে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আর তার স্ত্রী এমপিওভুক্তি হওয়ার পরও দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে আসেননি। আমি তার কাছে জবাব চেয়েছি। কিন্তু তিনি জবাব দেননি।
মতামত