ছবি : বীরগঞ্জে ছাতা কারিগরদের দুর্দিন চলছে
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে দীর্ঘদিন থেকে অনাবৃষ্টির কারণে ছাতা মেরামতের কারিগরদের মন্দা চলছে। বর্ষার সময় ছাতা কারিগরদের কদর বাড়লেও এবছর নেই।
ষড়ঋতুর এই দেশ বাংলাদেশ। বর্ষার দুই মাস হলো আষাঢ় আর শ্রাবণ মাস। এ বছর আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে তেমন বৃষ্টি নেই বলেই চলে।
সাধারণত বর্ষাকালে একটানা বৃষ্টি হলে মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায়। তাই বর্ষাকালে ছাতার ব্যবহার অন্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়ে যায় ছাতা কারিগরদের। কিন্তু এবার তার উল্ট পথে হাঁটতে শুরু করেছে প্রকৃতি।
ছাতা কারিগররা বলেছেন,
সারাবছর তেমন একটা কাজ থাকে না ছাতা কারিগরদের। তবে বর্ষা যেন তাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কারণ, বর্ষা এলেই কদর বাড়ে তাদের। আর গেলো কয়েকদিন ধরে মাঝেমধ্যে একটু-আধটু বৃষ্টির কারণে কাজ একটু কর্মব্যস্তা বেড়েছে।
উপজেলার পৌরসভা দৈনিক বাজার, কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে ছাতা মেরামতের কাজ করে কারিগররা, তবে বর্ষাকালে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসে মৌসুমী কারিগররা ছাতা মেরামত করছে।
এসব স্থানে নষ্ট ছাতা মেরামত কর লোকজনের ভিড় করে থাকে। কারিগরদের ব্যস্ততা অনেক যায়।তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত একটানা কাজ করে যাচ্ছেন।
বীরগঞ্জ পৌরশরের দৈনিক বাজার এলাকায় বন্ধ দোকানের বারান্দায় ছাতা মেরামতে ব্যস্ত ছিলেন শুকুর উদ্দিন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিনি ছাতা মেরামতের কাজের সঙ্গে যুক্ত। শুকুর উদ্দিন বলেন, বৃষ্টি হলে কাজও বেশী হয়। বৃষ্টির দিনে ছাতা মেরামতের কাজ একটু বেশি হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে টানা বৃষ্টি না থাকায় আয় রোজকার কমে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে দিনে তিন থেকে পাঁচ শত টাকা রোজগার হয়। তবে অন্য সময় তেমন একটা কাজ থাকে না।
গতবছরে টানা বৃষ্টি দিনগুলিতে ১৫ শত টাকা থেকে দুই হাজার টাকার কাজ করেছি।তবে ছাতা মেরামতের সামগ্রীর দাম বেড়েছে আর মুজুরিও বেশি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ছাতা মেরামত করতে আসা জনসাধারণের।
উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষত্র গ্রামের হরিদাসের বলেন, ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। বৃষ্টির সময়ে বাতাসে ছাতার শিক ভেঙ্গে গেছে, তাই স্কুল ও প্রাইভেট পড়তে গেলে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ছেলেমেয়েদের জন্য ছাতা দুইটা মেরামত করতে এসেছি।কাহারোল উপজেলার সাইনবোর্ড গ্রামের ছাতার কারিগর সুরুজ মিয়া বলেন, ছাতার কারিগরদের দুর্দিন চলছে। তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশাই গেছে।আবার অনেকে পূর্বপুরুষের এ পেশা ছাড়তেও পারেনি।
পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এ পেশায় কেউ আসতে চায় না। তাই দিন দিন এই পেশার কারিগররা হারিয়ে যাচ্ছে।
মতামত