সারাদেশ

কচুর লতিতেই খানসামায় ভাগ্য বদলের স্বপ্ন

প্রিন্ট
কচুর লতিতেই খানসামায় ভাগ্য বদলের স্বপ্ন

ছবি : কচুর লতিতেই খানসামায় ভাগ্য বদলের স্বপ্ন


প্রকাশিত : ২৯ জুলাই ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:২০


গরিবের পুষ্টিকর সবজি হিসেবেই পরিচিত কচু। এর মধ্যে ‘লতিরাজ’ একটি উন্নত জাত, যা স্বাদ ও পুষ্টিগুণে অনন্য। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষকরা এখন এই জাতের কচু চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছেন। কম খরচে বেশি লাভ লতিরাজ কচু চাষে আগ্রহী কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় নিরাপদ এই সবজি চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামের কৃষক মুকুল চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দুবলিয়া গ্রামের কচুক্ষেতে কৃষক মুকুল চন্দ্র রায় লতিরাজ কচুর লতি সংগ্রহ করছেন। সবুজ মাঠজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কচুর গাছে ভরপুর লতি।

মুকুল চন্দ্র রায় জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কুমিল্লা থেকে সংগ্রহ করা বারি-১ জাতের ৭ হাজার লতিরাজ কচুর চারা ৫০ শতক জমিতে রোপণ করেন। রোপণের ৬০-৭৫ দিনের মধ্যে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে লতি বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ৫-৬ মণ কচুর লতি উত্তোলন করে বাজারজাত করছেন। মৌসুমজুড়ে লতি বিক্রি করে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন তিনি। এছাড়া মৌসুম শেষে কচুর কন্দ বিক্রি করেও আরও প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা আয় হবে।

মুকুলের ভাষ্যে, ৫০ শতকে এই চাষে জমি প্রস্তুত থেকে কর্তন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। তুলনামূলক কম খরচ, কম শ্রম আর ভালো মুনাফা সব মিলে এটি তার জন্য লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। তাই আগামী লতিরাজ চাষ বৃদ্ধি করবেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানান তিনি৷

স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লতিরাজ কচুর লতি, পাতা ও কন্দ তিনটিই কাজে লাগে। লতি ও কন্দ সবজি হিসেবে এবং পাতা শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ পাতা দিয়ে জৈব সারও তৈরি করছেন।

গোয়ালডিহি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোপাল রায় বলেন, “স্বল্প সময়ে ভালো ফলন, সুস্বাদু স্বাদ ও বাজার চাহিদার কারণে এই জাতের কচু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত পরামর্শ ও উৎসাহ দিচ্ছি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, “কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের লতিরাজ কচু চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ভালো ফলন ও বাজারে চাহিদার কারণে চাষিরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষকরা সঠিকভাবে নির্দেশনা অনুসরণ করলে কচু চাষে দেশজুড়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।”