ছবি : খানসামায় ইছামতি নদী ভাঙনে হুমকির মুখে নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, রক্ষার দাবি শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের।
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ইছামতি নদীর ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয় ভবন থেকে এখন মাত্র ৩ থেকে ৭ ফুট দূরে নদীর ভাঙন। দ্রুত নদীশাসনের মাধ্যমে বিদ্যালয় রক্ষার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নলবাড়ী গ্রামের ক্যাম্পেরহাট এলাকায় ইছামতি নদীর তীরে গড়ে ওঠা মনোরম পরিবেশে নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে নিয়মিত পাঠদান। বিদ্যালয়ের সামনে রয়েছে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ। মাঠের পশ্চিম পাশে একতলা ভবনের ৫টি শ্রেণিকক্ষ, ১টি কমনরুম, টিনশেডের ১টি লাইব্রেরি এবং ২টি ব্যবহারিক শ্রেণিকক্ষ অবস্থিত। এসব কক্ষের ঠিক পেছনেই নদীভাঙনের কারণে আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ইছামতি নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। বিশেষ করে নদীর পানি বেড়ে গেলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। বিগত ৬-৭ বছর ধরে এই ভাঙন ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর্নিকা আকতার বলেন, ‘নদীভাঙনের ফলে প্রতিদিন ক্লাস করতে গিয়ে ভয় লাগে। জানি না কখন নদী ভেঙে ভবনটা নিয়ে যাবে! আমরা স্বস্তিতে পড়াশোনা করতে চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা মিম শাহ বলেন, ‘নদীভাঙনে যদি বিদ্যালয়ের ভবন ধসে পড়ে, তাহলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চরমভাবে ব্যাহত হবে। তাই ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বিদ্যালয় রক্ষা করা জরুরি।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রশিদা বানু বলেন, ‘প্রতিবছরই বর্ষায় নদীভাঙনের মুখে পড়ি। তবে এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নদী ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে লিখিতভাবে জানানো হবে, যাতে দ্রুত ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।”
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এবং ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।
মতামত