দিনাজপুর ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এ পর্যন্ত ৫৭ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পুশ ইন করার সময় শূন্য হাতেই তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। ভারতে থাকাকালীন তাদের উপার্জিত কোন অর্থ, কাপড় বা অন্য কিছু আনার সুযোগ দেওয়া হয়নি তাদেরকে।
সীমান্ত পরিস্থিতির বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দিনাজপুর বিজিবি সেক্টরের শহীদ কর্ণেল গুলজার হলরুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান দিনাজপুর-৪২ বিজিবির পরিচালক ও অধিনায়ক লে. কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসান।
এছাড়াও ঈদের এই সময়ে যাতে করে সীমান্ত দিয়ে কোন গরু না আসতে পারে এবং ঈদ পরবর্তী সময়ে যেন কোন চামড়া পাচার না হয় সেজন্য বিজিবি সচেষ্ট রয়েছে।
এ সময় ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান, সুবেদার মেজর সামিউল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দিনাজপুর-৪২ বিজিবির পরিচালক ও অধিনায়ক লে. কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসান জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ কর্তৃক পুশইন করা ব্যক্তিদের বিজিবি আটক করে তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে পুশইন প্রতিরোধে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সাথে নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পুশইন করায় বিজিবি নিয়মিতভাবে বিএসএফ’র সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দিনাজপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নে প্রতিটি সদস্য সীমান্ত এলাকার প্রতি ইঞ্চি সীমান্ত সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার শান্তি, নিরাপত্তা ও অপরাধমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে আমাদের সাথে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো ধরনের সন্দেহজনক ব্যক্তি বা তৎপরতা পরিলক্ষিত হলে দ্রুত বিজিবিকে অবহিত করুন। আপনাদের সহযোগিতাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। বিজিবি হবে ‘সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক’ এই লক্ষ্য অর্জনে বাহিনীর প্রতিটি সদস্য উজ্জীবিত ভাবে নিরলস দায়িত্ব পালন করে আসছে।
ঈদের ছুটির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারে সেজন্য বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান, দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং ঈদ জামায়াত সহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিক দায়িত্বে নিরাপত্তা বিধানে সদা সচেষ্ট ও তৎপর থাকবে। আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত দিয়ে গরু চোরাচালান এবং চামড়া পাচার রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত কুরবানির পশু মজুদ রয়েছে। দেশীয় খামারিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে যাতে গরু প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। একইভাবে ঈদের পর কুরবানির চামড়া যাতে সীমান্ত দিয়ে পাচার না হয় সেজন্যও বিজিবি সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে বলেও জানান তিনি।
মতামত